Saturday, December 31, 2016

হাঁসজারু

গুপ্ত যুগে সুপ্ত ছিল যেসব জামা,
বাজারদরের আর্লি কাটে তাদের নামা।
পোকাধরা ময়লা পড়া জংলি হাটে,
লজ্জা শরম বিকিয়ে যারা আজ প্রভাতে,
রাস্তা নিলো, সস্তা ছিল তাদের হাসি,
কেও ডাক্তার, কেও প্রফেসার, কেও প্রবাসী।
শহরজুড়ে ঠান্ডাগরম নামার আগে,
মানিয়ে নেওয়া রেনেসাঁসের দুর্বিপাকে,
যে জনগন, তাদের জন্য রইল আশা,
শীতের সকাল, ধুম্র ঘন রোদ কুয়াশা।

Sunday, December 25, 2016

বাকিটা ব্যাক্তিগত

সে দিনটা ছিল বেপরোয়া,
আলিঙ্গনে আড়মোড়া ভাঙা স্তবকের ভেসে বেড়ানোর স্মৃতি,
দুপুরের মিঠেকড়া রোদে শুকনো হতে থাকা কড়াপাকের হাসি,
আলতো কিছু আবদারে মাখা, স্পর্শে ভেজা মুহূর্ত,
সব এখনও তাজা। 


বোলপুরের লাল মাটি, লবণহ্রদের সবুজ মেরুন যেখানে এক হয়,
সেই পথ ধরে অরও কিছুটা, টলমল করা সময়ের হাত ধরে,
কিছুটা কানে ফিসফিস, বাকিটা আঙ্গুলে আঙ্গুল রেখে,
স্পন্দনে স্পন্দনে, আকাশ কুসুম।

লেনদেন ছিল, চাওয়া পাওয়া ছিল,
ছিল অনেক আটপৌরে গল্পের গন্ধ মাখা,
সিনেমার লালিত্যে ভরা, বাস্তবের বন্ধুরতার ভয়ে সাজানো,
একটি নতুন গল্পের পরিকল্পনা।

তারপর নাগরদোলা, ওপরে নিচে, ডাইনে বাঁয়ে,
ভয়ে আনন্দে ক্লেশে আশায় শ্রিহরনে বিশ্বাসে,
টগবগ করা সঙ্কল্পে,
বাতাসে বাতাসে, মাটিতে জলে এক হয়ে যাওয়ার গল্প।

চিঠি এলো, রঙ্গিন খামে মোড়া,
ঘামের, স্পর্শের, শরীরের, স্নিগ্ধতার গন্ধ মাখা কালিতে লেখা,
বাকিটা ব্যাক্তিগত।

Tuesday, December 6, 2016

দুঃবাস্তব

ঘুম থেকে উঠে চোখ মেলতেই বেহুঁশ হওয়ার জোগাড়। ঘরের দেওয়াল, দরজা জানালা, টেবিল চেয়ার সব দোমড়ানো। আমার ঘরের আলমারি থেকে কে যেন আমার বই খাতা, জামাকাপড় গুলো দুমড়ে মুচড়ে শূন্যে ছুঁড়ে দিয়েছে। কৌতূহলের বশে অবতল দেওয়ালের বুকে হাত বোলাতে গিয়ে বুকটা ছ্যাঁক কোরে উঠলো। প্রাচীর ভেদ করে গেল আমার হাতের আঙুল। হঠাৎ বুকের মধ্যে একটা তীব্র ডানা ঝাপটানো অনুভব করতে শুরু করলাম। বুকের ভেতর থেকে শ্বাসনালী বেয়ে তীব্র একটা ঝড় যেন গলা অবধি এসে আটকে যাচ্ছে, শরীরের মধ্যে বনবন করে ছুটে বেড়াচ্ছে। চোখে মুখে ঘাম জমতে শুরু করলো। ঘামের ফোঁটাগুলিও যেন কিসব আকার ধারণ করছে। দুমড়ে যাওয়া আয়নার পাশে দাড়াতেই ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হলাম। কি বীভৎস আমাদের দুমড়ে যাওয়া রূপ। আমার দেওয়ালে, আমার প্রিয় লাস্যময়ী অভিনেত্রীটিও যেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। আমি কি তবে স্বপ্ন দেখছি, নাকি ঘুমের ঘোর এখনো কাটেনি! ডান হাতটা তুলে চোখ কচলাতে গিয়ে প্রায় দম বন্ধ হয়ে এলো, হাত তন্নতন্ন করে হাওয়ায় খেলে বেড়াচ্ছে, কোথায় চোখ, কোথায় মুখের অস্তিত্ব, কোথায় আমি! বেশ কিছুক্ষন চুপচাপ চোখ বন্ধ কোরে বোসে থাকলাম। একটা দুস্বপ্ন শেষ হওয়ার অপেক্ষায়। কিন্তু আবার চোখ মেলতেই, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া সব চোখের সামনে। একটু সাহসে ভর করে, জানালা দিয়ে উঁকি মারলাম। চারিদিকে যা দেখলাম তা গোলোকধাঁদার চেয়ে কম কিছু না। মানুষ, গাছপালা, রাস্তাঘাট, গাড়িঘোড়া, পশুপাখি, দোকান বাজার, সব যেন একটা প্যাঁচানো পাইপেরর মধ্যে ঢুকিয়ে গিঁটের পর গিঁট লাগিয়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে সর্বত্র। তারই মাঝে কোন একটা জায়গায় আমি আমার ঘরের মধ্যে আবদ্ধ। কিছুই হাত বাড়িয়ে ছোঁওয়া যায় না। কোথাও পা ফেলে ভর দেওয়া যায় না, যেন হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছি, অস্তিত্বহীন, অবয়বহীন।

 আমাদের বাস্তবটা কি এর চেয়ে আলাদা কিছু? কার্ভড স্পেস টাইম এর বাস্তবতা চাক্ষুষ করতে একবার চোখ মেলে দেখুন চারিদিকে। রাষ্ট্র, সমাজ, পাড়ার গলির আনাচে কানাচে, মাঠের ধারের গাছের নিচে, রাস্তায় দোকানে বাজারে সর্বত্র সবকিছুই দোমড়ানো নয় কি! আমাদের সোজাসাপটা চেহারার পেছনের ভাবনাগুলো কি এতোটাই সহজ সরল! একটা সহজ কথা বলার আগে তাকে দুমড়ে মুচড়ে নেওয়ার স্বভাব আমাদের সবার। শিক্ষা দীক্ষা, সমাজ সচেতনতা নির্বিশেষে আমরা সবাই ওই প্যাঁচানো পাইপের এক একটা চিত্রপট। ঘোরানো প্যাঁচানো গোলকধাঁধায় আমরা জর্জরিত। এক একটা সোজা চলে যাওয়া রাস্তা, এক একটা ওপরে উঠে যাওয়া সিঁড়ি, এক একটা চোখ ধাঁধানো ইমারৎ, এক একটা জমজমাট বাজার পাটের পেছনে লুকিয়ে আছে কতশত তালগোল পাকানো ইতিবৃত্ত। একবার নিজেকে প্রশ্ন কোরেই দেখুন না, একদিন সকালে ঘুম ভেঙে আয়নার সামনে দাঁড়াতে, নিজের বাহ্যিক অবয়বের পরিবর্তে নিজের আভ্যন্তরীণ চেহারা দেখতে পেলে ভির্মি খেতেন না তো!!!

Thursday, July 28, 2016

স্রোত

ডানপিটেদের রাত কাবারি, রক্তজমা ইস্তেহার,
রাত বিরেতে ডাক প্রহরীর, 'জাগতে রো- খবরদার'।
যে যার মত গড়ছে খবর, রাখছে ল্যাজা ছাঁটছে আঁশ,
নিদ্রা চোখে জাগছে মানুষ, উড়ছে ধুলো, রুদ্ধশ্বাস।

ঘড়ির কপাল ছুঁয়ে গেছে গুলি, কাঁটা ঘুরলেই রণ,
স্নাতক পথে বিছানায় শব, সবাই আপনজন।
দোদুল্যমান চিড় ধরা শির, যন্ত্রণা নিয়ে বাড়ছে,
বাঁচার আশায় দিন দিন সব, মরছে অথবা মারছে।

খাওয়া দাওয়া চুকে গেছে, পোড়ে আছে ডাল-ভাত মাখা,
হাওয়া দিলে তবু ওড়ে আকাশেতে ছিন্ন পতাকা।
বাঁধ ভেঙে ধ্বস নামে, পড়ে থাকে ঝুরঝুরে বালি,
আকাশেতে তবু ওঠে সুন্দর চাঁদ একফালি।

Thursday, July 7, 2016

এক নিমেষে

দুদণ্ড সময় ছিল জিরিয়ে নেওয়ার,
দুপশলা বৃষ্টি ছিল নাগাল হাতে,
দুপলকে ভাব বিনিময় মুচকি হাসি, 
মাত্র দু দিন সময় ছিল তোমার সাথে।

এক নিমেষে লাগলো জোড়া দুই পৃথিবী,
এক নিমেষে হাসলো পাখি আকাশ জুড়ে,
শান্ত চোখে পড়লো ধরা ক্লান্তি রেখা,
একনিমেষে গাইল দুজন একক সুরে।

স্নিগ্ধ ছিল তোমার হাসি, আমার বুকে,
মিলিয়ে গেল ক্লান্ত শরীর, হাসির রেশে,
দুদণ্ড সময় ছিল জিরিয়ে নেওয়ার,
একটি ভুবন উঠলো গড়ে, এক নিমেষে। 

Sunday, July 3, 2016

স্কেপ্টিকাল

অনতিদূরে সাইরেন ডাকা শহর, কবরে ঢাকা,
বেওয়ারিশ আবছায়াগুলো কালো, আঁধারের পতাকা,
মুঠো মুঠো ব্যাথা গিলে চলেছে, সারি সারি ঘর বাড়ি,
রকমারি সাজে ঢাকা পড়ে যায় ভাঙাচোরা সংসারি।
গিলছে মাদক, গিলছে বায়ু, স্পন্দনহীন স্নায়ু,
তার কেটে গেছে বহুদিন হোলো, থমকে আছে আয়ু,
রেলরোড ধোরে সোজা চোলে গেলে, শহরের দেখা মেলে,
কয়েদ রয়েছে মুমূর্ষু শহর, জাহান্নমের সেলে।
ওক্টোপাসের অন্ডকোষে পেন্নাম ঠুকে রোজ,
তেল বেগুনের করমর্দনে সুস্বাদু ভূরিভোজ,
স্কেপ্টিকাল, তবু হাতে হাতে, বাহবার ছড়াছড়ি,
রাতের চাদরে, শহরের কোলে, কিন্নর কিন্নরী।
পোড় খাওয়া ঝুরঝুরে, শহরের, রাস্তার জঞ্জালে,
ঠুনকো মৃতপ্রায়, নামানুষের, আত্মারা হাঁটেচলে,
রঙ মেখে সং সেজে, রাশভারী, কংকাল দেয় ঘুম,
তোমার শহর, আমার শহর, পাশাপাশি, শব, নিঝুম।

Saturday, July 2, 2016

বড়লাট

টুপটুপ ঝোরে পড়া সোনালি বৃষ্টির গুঁড়ো,
গায়ে মাখা, মন মাথা ভিজিয়ে নেওয়ার তাড়াহুড়ো,
ফুরফুরে বয়ে চলা ঠান্ডা দখিনের হাওয়া, 
তারই মাঝে লুকিয়ে, হারানো, কত চাওয়া পাওয়া,
দুধসাদা বরফের টুকরো, হাতে নিয়ে খেলা,
সময়ের তাড়া ভুলে, স্নান খাওয়া, রোজ অবহেলা,
তুমি আছো, আমি আছি, আছে কত বৃষ্টির ছাট,
বৃষ্টি ভিজে আজ তুমি লন্ডন, আমি বড়লাট।

Tuesday, June 28, 2016

আত্মীয়তা

তাকিয়ে দেখো, আলোর শহর, আঁধার ঘরে ঘরে, হাল্কা দোলায় শিরদাঁড়াটাও ভীষণ রকম নড়ে। কাঁপতে থাকে রঙের মিছিল গন্ধকেরই সাজে, মুখোস ঢাকা সুপ্ত বদন ডুব দিয়েছে লাজে।
আপন পরের হিসেব যাদের চারদেওয়ালে মোড়া, লাগাম ছাড়ো, পালিয়ে বাঁচুক, আত্মীয়তার ঘোড়া। গুনতে পারো, কলম চালাও, মেলাও দেখি দেনা, মেকি হাসির বদান্যতা আর নেওয়া যাচ্ছেনা।
কুলুপ আঁটা গলার নিচে জমতে থাকা রোষ, দিনদুপুরে ঢিল মেরে যায়, অবাধ আক্রোশ। আড়াল করো লোকদেখানি এসব চেনাজানা, পানা পুকুরে ধরছে পচন, বিষাক্ত যন্ত্রণা।

Saturday, June 25, 2016

প্রেম

ধৃষ্টতা আজ তোমার ঠোঁটের ছোঁওয়া,
ধৃষ্টতা আজ তোমার আলিঙ্গন,
ধৃষ্টতা আজ মনমালিন্য ভুলে
প্রেমের সলিলে বাঁধ ভাঙা বর্ষণ।

পেলবতা আজ তোমার মুখের হাসি,
পেলবতা আজ তোমার চোখের জল,
পেলবতা আজ তোমার শাড়ির ভাঁজে,
লুকিয়ে থাকা মনখারাপের ঢল।

স্নিগ্ধতা আজ তোমার শরীর বেয়ে,
স্নিগ্ধতা আজ তোমার স্পন্দন,
স্নিগ্ধতা আজ একাকিত্বের রাতে,
তোমার আমার অটুট বন্ধন।

Friday, June 24, 2016

সমান্তরাল সরলরেখা

ইংরাজরা দেশছাড়া হয়েছে, সে হোলো প্রায় কয়েক দশক। কিন্তু তারা তাদের পেছনে ফেলে গেছেন তাদের থাকাখাওয়া, চালচলন, আদবকায়দা, পোশাকআশাক, আচার ব্যবহার, আরো কত কি। তবে মাথাব্যাথার কারণ হোলো তাদের আমলের চিরপরিচিত প্রজাতি, মাছি মারা কেরানি, যারা, ইংরাজরা চলে যাওয়ার এতদিন পরেও স্বমহিমায় বর্তমান। না এনারা আজকাল আর মাছি মারেন না কিম্বা কেরানিগিরিও করেন না হয়তো, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কুঠুরিতে বোসে জোয়ান চেবান আর বাতেলা দেন। তবে এতে তেনাদের ঐতিহ্য বিন্দুমাত্রও খর্ব হয়না। আজও প্রভু আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে এনাদের জুড়ি মেলা ভার। রাজার মাথার ব্যামো, ওনার ইচ্ছে রাজ্যের প্রজারা সকলে নিজের নিজের মাথায় পাখির ইয়ে মর্দন করুন, তাতে রাজার ব্যামো সারলেও সারতে পারে। ব্যাস ওমনি কেরানির দল সারা রাজ্যের পাখির ইয়ে সংগ্রহে লেগে পড়লেন। এতে দেশের দশের কি লাভ তাতে তাদের কিসসু যায় আসে না।
এনাদের চক্ষু কর্ণ দৃশ্যমান হোলেও তা ব্যবহারের অভাবে নিতান্তই অকার্যকরি। মানুষের ব্যবহার উপযোগী যা কিছু সবই এনাদের অলঙ্কার মাত্র, যা স্থান কাল পাত্র নির্বিশেষে রাজার পায়ে সমর্পণ করতে এনারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। রোজ সকালে বাড়ি থেকে বেরোনোর আগে এনারা এনাদের মগজ বাক্সবন্দি করে তালা লাগিয়ে নিয়ে এসে রাজার দরবারে জমা দেন। রাজার হুকুম মত সমস্ত বাক্সবন্দি মগজ পুকুরের জলে ফেলে দেওয়া হয়। বাড়ি ফেরার পথে এনারা পুকুরে ডুব দিয়ে এক একটি বাক্স তুলে বাড়ির পথে হাঁটা লাগান। কে কোন বাক্সের মগজ পেলেন এতে তেনাদের কোনো তফাৎ পড়েনা।
সন্ধ্যের অন্ধকারটা সবে ঘনিয়ে আসছে। আলোর রেস ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছে দিগন্তরেখা ধরে। কেরানির দল টুপটুপ করে ডুব মারছেন পুকুরের জলে, আর কাদা পাঁক মেখে বাক্সবন্দি মগজ হাতে হাসিমুখে বাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছেন। পথের ধারে তাদের দেখে হাসার মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম। এদের দেখে যারা দিব্যি মুখ ফিরিয়ে নিজের নিজের কাজে মন দিচ্ছেন তারা হলেন সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষায় বাবুগন। শুধরে দেওয়া তো দূর অস্ত, কাদা পাঁক থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখতেই তারা ব্যস্ত। এনারা নিজেদের গা বাঁচিয়ে চলতে এতটাই পটু যে প্রবল বৃষ্টিতেও এনাদের ছাতার প্রয়োজন হয় না, দিব্যি সুট প্যান্ট টাই এঁটে বৃষ্টির ধাঁরা থেকে গা বাঁচিয়ে এঁরা অফিস থেকে বাড়ি আর বাড়ি থেকে অফিস ছুটে বেড়ান। চোখের ওপর ঠুলি আর গায়ে সুগন্ধি আতরে এদের চেনা যায়। খাওয়ার টেবিলে, চায়ের আড্ডায়, তাসের আসরে এরা পৃথিবী উল্টেপাল্টে ফেলেন গলার জোরে। তারপর বাড়ি ফিরে এসে সেই কথাগুলি নস্যির কৌটায় ভরে নাকে দিয়ে ঘুম লাগান। হাঁচির সাথে সাথে হাওয়ায় মিলিয়ে যায় সমস্ত যুগান্তকারী বক্তব্যের বাস্তবতা।
অগত্যা দুই শ্রেণির মানুষ দুটি সমান্তরাল সরলরেখা বরাবর হেঁটে চলেছেন। সূর্যের আলো, রাতের জ্যোৎস্না, মেঘ বৃষ্টি, আলো বাতাস, সবই এদের কাছে সমানভাবে পৌছলেও, ব্যাবহারগত ভাবে সব আলাদা আলাদা। এঁরা একে ওপরকে লম্বদূরত্বে দেখেন, ভুরু কোঁচকান, মুচকি হাসেন আর নিজের নিজের পথে দিব্যি হাঁটা লাগান লম্বদূরত্ব বজায় রেখে। যতক্ষণ না সামনাসামনি হচ্ছে এভাবেই চলতে থাকে সব। প্রাকৃতিক শারীরিক কিম্বা মানসিক বিকৃতিজনিত কারণে যদি সামনা সামনি হয়ে যায় এই দুই শ্রেণির, সমস্যাটা সেখানেই শুরু। একবাক্স অকার্যকরী মগজ ও হুকুম মানার অদম্য ইচ্ছা আর একবাক্স নৈরাশ্যের সম্মুখসমরে জয় পরাজয় নির্বিশেষে ক্ষয় হয় সমাজ, ক্ষয় হয় এত শতাব্দী ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা মানব সভ্যতার।
কোন সরলরেখা ধরে হাঁটবো এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ব্যাস্ত,সবাই। কিন্তু তার আগে একবার ভেবে দেখলে ভালো হয়, সরলরেখা গুলি কি সত্যিই সরল, নাকি আমাদের সীমিত দর্শন এবং স্তিমিত মগজাস্ত্রের অত্যাল্প আস্ফালনের কারণে আমরা আমাদের চারিপাশের ক্রমচক্রায়িত গ্রন্থিবদ্ধ বাস্তব থেকে বিমুখ।

Sunday, June 19, 2016

লুকোচুরি

ক্লাসটা শেষ হোতে তখনো অনেকটা সময় বাকি। রসায়নের গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডে তখন মন ডুবিয়ে দিয়েছি। হঠাৎ গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডের তেজে মনটা গলে যেতে শুরু করলো। কিছুটা মন সালফেট হয়ে অধঃক্ষিপ্ত হোলো আর বাকিটা জলের সাথে মিশে ছুটে বেড়াতে লাগলো বিশ্ব ব্রম্মান্ডে। যাবতীয় ক্ষারকিয়, মেঘ বৃষ্টি, প্রেম ভালবাসা, মাঠ ময়দান, ধ্যান ধারনা, সবকিছুর সাথে বিক্রিয়া শুরু হোলো। জমে উঠতে লাগলো স্মৃতির ওপর স্মৃতির অধঃক্ষেপ। আর আছড়ে পড়তে লাগলো একটার পর একটা ঢেউ মনের কিনারে। ক্লাস শেষ হোলো, স্কুল ছুটি হোলো কিন্তু সালফিউরিক অ্যাসিডের প্রভাব গেল না মন থেকে। স্কুল থেকে ফিরছি। চারিদিকে কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছে, বৃষ্টিও পড়ছে সামান্য। কাদামাখা রাস্তা বেয়ে হেঁটে বাড়ির দিকে চলেছি। হঠাৎ আমার নাম ধরে কে যেন ডাকছে মনে হোলো। আধভেজা একটা কাগজ আমার হাতে গুঁজে দিয়ে যে মেয়েটা আর এক মুহূর্তও অপেক্ষা করলো না, তাকে রোজ দেখি, কিন্তু তার এই বৃষ্টিমাখা আলোআঁধারি রূপ এর আগে দেখেছি বোলে মনে হোলো না। সে যে পথ দিয়ে ছুটে গেলো সেই পথের দিকে কতক্ষণ যে তাকিয়ে ছিলাম, কোন কোন ভাবনার জগতে যে বিচরণ কোরে বেড়িয়েছি, তার হিসাব শুধু গাঢ় সালফিউরিক অ্যাসিডে ডুব দিলে পাওয়া যাবে। যখন বাস্তবে ফিরলাম, আমার হাতের কাগজটা আমার হাতেই ডেলা পাকিয়ে গেছে। অ্যাসিড ভেজা মনটা, সে যেন ক্ষার মিশিয়ে লবণাক্ত কোরে দিয়ে গেলো। কিজানি আজ হয়তো অন্যদিনের মতই মেয়েটি তার বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মাতবে, কিম্বা হয়তো আমার মতই ভাবনার জগতে বিচরণ করবে, যদি আরেকবার দেখা হয়ে যায় ভাবনার জগতে সেই আশায়। বাড়ি ফিরেছি বেশ খানিকক্ষণ হোলো। বৃষ্টি ভেজা জামাকাপড়, কাদামাখা জুতো এখনো আমায় জড়িয়ে। সেই মুহূর্তের সবকিছুই আঁকড়ে ধরে রাখতে ইচ্ছে করছে। বেশ কয়েকবার মায়ের বকুনি খেয়েছি ইতিমধ্যে। সামনের টেবিলে মুড়ির বাটিটা যেই-কে-সেই। আমি যেন মুড়ির বাটিতে ঢুকে পড়েছি। একেকটা মুড়ির আড়ালে আড়ালে লুকোচুরি খেলছি আর অপেক্ষা কোরে আছি, কেও পেছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরবে আর বলবে, ধাপ্পা। মায়ের তীব্র বকুনির জেরে, ভেজা জামাকাপড় ছেড়ে আলমারি থেকে শুকনো গরম জামাকাপড় বের করতে আলমারি খুলে জামাটা যেই বের করতে যাবো, অমনি কে যেন জামাকাপড়ের আড়ালে টুকি বোলে ডেকে উঠলো। মনকে আর আটকে রাখা গেল না। এবার ডুব দিলাম রঙ বেরঙ্গের জামাকাপড়ের সমুদ্রে। যে জামাকাপড় গুলো রোজ ঘামে বৃষ্টিতে ভিজে ছুঁড়ে ফেলি, ফুটবলের মাঠে কাদায় গড়াগড়ি খাই, আজ যেন হঠাৎ সেই জামাকাপড় গুলো খুব প্রিয় হয়ে উঠেছে। আলতো হাতে একটার পর একটা জামা সরিয়ে সরিয়ে দেখতে লাগলাম আর খুঁজতে লাগলাম তাকে। বইখাতা খুলে বসেছি। হঠাৎ বই থেকে সব যেন ডানা মেলে বেরিয়ে পড়তে লাগলো। জ্যামিতির আকার, ক্যালকুলাসের হিজিবিজি, সুদাসলের টাকা পয়সা, ঐকিক নিয়মের দেওয়াল রাস্তা মাঠ শ্রমিক সব যেন ঘরময় ঘুরে বেড়াচ্ছে। কখনো সমাকলন এর দাঁড়ি আমার মাথায় গাঁট্টা মেরে যাচ্ছে তো কখনো ঐকিক নিয়মের শ্রমিক আমার চুল টেনে বর্গমূলের নিচে লুকিয়ে পড়ছে। সারাটা সন্ধ্যে, সারাটা রাত, এভাবেই লুকোচুরি খেলে গেলাম কতরকম ভাবে। লুকোচুরি খেলতে খেলতে কখন যে ঘুমের দেশে ঢলে পড়েছিলাম খেয়াল নেই। পরের দিন সকালে ওঠা থেকে ভুলেই গেছিলাম আগের দিনের কথা। দিব্যি রোজের মতন স্নান খাওয়া পড়া, স্কুলের শুকনো জামাকাপড়, জুতো মোজা, মায়ের হাতের গরম ভাত, সব কিছুই ছিল সাধারণ। বাড়ি থেকে বেরোতে যাবো, হঠাৎ একটা ফোন। ফোনের ওদিকে বিল্টুদা, আমাদের স্কুলের সিনিয়র। :- কাল আমি স্কুলে যাইনি। বোনের হাতে রসায়ন এর স্যারের নাম্বার টা পাঠিয়েছিলাম। স্যার বোল্লেন তুই নাকি ফোন করিসনি। :- দাদা কাগজটা বৃষ্টিতে ভিজে গেছে, তুমি আমাকে নাম্বার টা বোলে দাও আমি লিখে নি।
সালফিউরিক অ্যাসিডের ছোঁওয়া যে কতটা বিপজ্জনক তা টের পেলাম ঠিকই, তবুও অধঃক্ষিপ্ত স্মৃতিগুলো আজও তরতাজা। তাই সালফিউরিক অ্যাসিড আজও আমার প্রিয়, আজও আমার প্রিয় শব্দ টুকি, আর আজও আমার প্রিয় খেলা লুকোচুরি।

Thursday, June 16, 2016

সঙ্গোপনে

জীবন একটা রঙ্গশালা, ভাঙা গড়ার যাত্রাপালা, প্রেম বিরহ দহনজ্বালা, মুখোস ঢাকা সব।
লোকের মাঝেও হারিয়ে যাওয়া, চোখটি খুলেও হোঁচট খাওয়া, মেকি সকল চাওয়া পাওয়া, ধুসর অবয়ব।
ব্যবহারিক দ্রব্য সকল, ভাব অভিমান সবই নকল, মনমধ্যে কেবল ধকল, অনাবিল তাণ্ডব।
টুকরো কিছু আঁকড়ে ধরে, সবাই আছে বেঁচে মোরে, যে যার নিজের মতন কোরে, সাজায় মোচ্ছোব, সঙ্গোপনে।

Tuesday, June 14, 2016

কর্তৃপক্ষ

ক্যাটাপুল্টে টান ধরেছে, ধকল নিতে রাজি, রুক্ষ ডাঙায় লক্ষ্যভেদী বিফল বোমাবাজি। কালো হয়েছে হেঁসেল-হাঁড়ি অভিজ্ঞতার দামে, আজও আকাশ কালো হোলে প্রবল বৃষ্টি নামে।
উড়ছে ধুলো, তাকলা মাকান, শ্বাসকষ্ট ভারি, ধমনি বেয়ে ছুটছে পারা, তীব্র, স্বেচ্ছাচারী। আগল টানা চোখের কোণে জমতে থাকে ঘাম, ক্ষমতাধারী কর্তৃপক্ষ তোমাকে সেলাম।

Tuesday, May 10, 2016

আদম ইভের ছোঁড়া

তক্তাপোষে পেরেক ঠোকা, কলার বোনে ফাটল, ফিসচুলাতে সুড়সুড়ি দেয় নোঙরা কাঠের হাতল। গন্ধবারির সাপোর্ট পেলে সেপ্টিকে ঘর গড়ে, গ্লাভস পরা হাতে, সততা তোমায় আজও মনে পড়ে।
রক্তমাসের শক্ত ক্লাসে, লাস্ট বেঞ্চার মোরা, দেখলে হবে খরচা আছে, আদম ইভের ছোঁড়া। এম. সি. কিউ. এর পরীক্ষাতে, সমতাবাদি সবাই, ক্ষুধার টানে নির্বিচারে আদ্যোপান্ত জবাই।
সাবেকি আবেগ পোষমানানো, বিশ্বাসে ইউনানি, আর্ট বলতে নাইটশো আর শিক্ষাতে গুলতানি। একটা কথা বোলেই ফেলি ঢের হোলো প্রাইভেসি, মাল মশলার চেয়ে মোদের দেখনদারি বেশী।

Monday, May 9, 2016

Eternity

I hold you so tight, You melt, You melt all over me, Like a river, Like a river you flow, A river over a barren land, Cultivating memories, Memories so sweet.
You make me so happy, I glow, I glow in your eyes, Like a star, Like a star I shine, A star in a dark night, Pioneering your way, Your way towards life.
We love so much, We will burn, We will burn together, Like nothing else exist, Like nothing was there before, Like nothing will come, We will burn, We will burn to eternity.

Tuesday, April 19, 2016

চুপকথা

চোখে চোখে ঠোকাঠুকি, চাহনির সংঘাতে বাজ, শরীরে বাষ্প জমে, কপালে টুকরো কত ভাঁজ, গুমোট আবহাওয়া, থমকে পড়ে আছে কাজ, জানি, বৃষ্টির প্রয়োজন আজ। নীলাকাশে জমে ওঠে শুষ্ক মলিন অবসাদ, আলোর অভাবে কাঁদে একলা ভাঙ্গাচোরা চাঁদ, হীম ঢাকা পর্বত, চারিদিকে সুগভীর খাদ, সুন্দর ঘিরে থাকে দুঃসংবাদ। জং পড়া কলেবরে জমে আছে আবেগের তাল, সময় সুযোগ বুঝে প্রাণপাখি রোজ বেসামাল, শুকিয়ে জমাট বাঁধে মনমরা রক্তের লাল, ছুঁড়ে ফেলো পোষা জঞ্জাল। রঙহারা যানজটে খেলাগাড়ি রোজ চুনকাম, নিজেই নিজের সাথে দিনরাত বহু সংগ্রাম, অকপটে মেনে নেওয়া গল্পের শেষ পরিণাম, আজ হোক মহা ধুমধাম।

Thursday, April 7, 2016

জোট

পাল্লা দিয়ে ওড়াও ধুলো, দিস্তা কাগজ, সস্তা বিল,
মরছে মানুষ, পচছে দেহ, উড়ছে আকাশে শঙ্খচিল। ছুঁড়ছ আরোপ, মাখছ কাদা, 'বিচার বিচার' দিচ্ছ ডাক, রোজ প্রভাতে, প্রাণ নিয়ে হাতে, আমজনতা নিপাত যাক। খাটছে বেগার, ফাটছে রোদে, দীন শ্রমিকের শক্ত চাম, তোমরা শুধু তর্ক কর, কে ঘাসমূল কেই বা বাম। মূল্যবোধের, নীতির অভাব, রাজনীতির এই তল্লাটে, দলাদলির গেরোয় ফেঁসে, রাস্তায় নেমে হল্লা দে। চল উজবুক, চল রে গাড়ল, আজকে মোরাও দল গড়ি, গুন্ডা ষণ্ডা কুত্তা পোষা, বুজরুকিতেও হাতেখড়ি, কেচ্ছা কিছু থাকলে ভাল, নাম লেখানো সহজ হয়, ভোটের পরে, জোটের চিড়ে ভিজিয়ে দিলেই মোদের জয়।

Tuesday, March 22, 2016

প্রশ্ন

ফুলদানি ভরা নাটকীয়তা বিছুটির মত লাগে,
ভরাডুবি যাক আম জনতা, রাজনীতি নাকি আগে! ব্যাপম ট্যাপম স্মৃতির পাতায়, ভেমুলা ইতিহাসে, নারদা নিয়ে মাতামাতি আজ বাঁধভাঙা উচ্ছাসে। কারুর গায়ে লালের ছিটে, কেউ সবুজে রাঙা, কেউ স্বার্থের উভ'সঙ্কটে, কভু জল কভু ডাঙা। কেউ গর্জায় দেশদ্রোহিতায়, কেউ চুমু খায় পথে, অ্যাম্বুলেন্সে আম জনতা, মরছে ধর্মঘটে। প্রশ্ন আমি তুলতেই পারি, জবাব থাকে যদি, আম জনতারে কেন ভুলে যাও, যেই পেয়ে যাও গদি।

Wednesday, March 9, 2016

এক-এর দুই

কিছুটা সময় ব্যাক্তিগত, বাকিটা দিলাম তোমায়, কিছুটা জীবন বাঁচি সবাই, বাকিটা কাটে কোমায়। কিছুটা শরীর ধোওয়া মোছা, বাকিটা মলিন, কালো, কিছু আবদার মিষ্টি কথায়, বাকিটা ধমকানো।
কিছুটা পথ তোমার সাথে, বাকিটা লেখা বাকি, কিছুটা গান আটকে ঠোঁটে, বাকিটা গাইবো নাকি! কিছু স্বপ্ন জাগায় আশা, বাকিরা দেয়না সাড়া, কিছুটা আমার প্রাপ্য জানি, বাকিটা আশকারা।
কিছুটা ব্যাথা চোখের কোণে, বাকিটা ফসিল বুকে, কিছু দরদাম কথার ছলে, বাকিটা গেছে চুকে। কিছুটা আমি আমার মত, বাকি আমিটা মৃত, কিছুটা আমরা একা সবাই, বাকিটা আশ্রিত।
আধখাওয়া জীবনযাপন, ডাল-ভাত-তরকারি, আধখানা চাঁদ মাথার ওপর, বাকিটা চাঁদের বাড়ি। আধখানা ঘুণ ধরা প্রেম, দেখা-শোনা-ছোঁওয়াছুই, সম্ভাবনার মাপকাঠিতে সবই এক-এর দুই।

Tuesday, March 8, 2016

Women's Day

Women's day is not a day to celebrate but a thought to take along, a dream to fulfill. Let us shape up a society where ladies seats in buses and ladies compartments in trains are of no use, a society where ladies quota in jobs is redundant and 'always ladies first' type outlook would be considered as backdated, a society where men and women would share home and office duties both, a society where virginity is not a taboo, a society where marriage doesn't mean a change of home for a girl, a society where women enjoy the same freedom a man do. That would be a society where women's day is celebrated daily from the heart.

We need to step up and maintain the same enthusiasm as that of wishing happy women's day, to make a society where every day is a women's day. Where a woman can return back home safe and sound at midnight without keeping her parents and relatives fearfully asleep, where a woman can go and lodge a complaint in a police station, alone, without the fear of getting harassed, where a woman can work with her male colleague or boss without getting nervous because of the undesired glances at her, even for a second, where a woman can visit any gynecologist without gasping once after hearing the name of a male doctor, where gender will not play a role to allow a foetus into this world.

We need a society where women are not treated as women weaker than men, but as women equally capable of men, where having a women competitor would not be a relief, where the power of women would not be justified by a mere section of the lot but the whole. Let us make a society where 'men will be men' would not be a mark of prowess over women but of gratitude towards them. Let us shape up a society, where wishing happy women's day is not a ritual or a routine but a characteristic that will be spread over generations to come.

Monday, March 7, 2016

জোকার

বুননের ক্লাস,
গল্পে ওঠাও ঢেউ,
শুনবে গাধা গরু, অর্বাচীন, সবাই।
নিশিদিন ত্রাস,
খোঁজ রাখেনা কেউ,
নিজের চোখে, নিজেই, হবে জবাই।


ঠোঁটের কোণে ঢং,
সাজানো হাসির ফাঁকে,
চিটিংবাজি, ন্যাকামি বুলিতে।
গিলে খাবে অহং,
বেঁচে যদি থাকে,
নির্বিচারে, অলিতে গলিতে।

সেজে থাকে সং,
সেলফিশ ব্রোকার,
মিশে থাকে আম-জন-পালে।
বদলাবে রঙ,
তাসের জোকার,
প্রয়োজনে অন্তিম চালে।

ভয়ঙ্কর মেটাস্টেবিলিটি

মেটাস্টেবিলিটি তে আটকে আছে সব, আমরা, আমাদের জীবন, আমাদের জীবনধারণ সব। সিস্টেমটাকে পার্টার্ব করে তার স্থায়িত্ব পরীক্ষা করার ইচ্ছা বা অবকাশ কোনটাই আমাদের নেই। পোটেনসিয়াল ব্যারিয়ারটা ক্রমশ বাড়ছে, বেড়েই চলেছে।
বছরের প্রথম বৃষ্টির কথা মনে পড়ে! হঠাৎ আকাশ ভেঙে রুপোলী ধারা নেমে আসতে দেখে, হাত বাড়িয়ে কয়েক ফোঁটা তালুবন্দি করা। তারপর সেই তালুবন্দি জলকণা নিয়ে আহ্লাদে মাখামাখি, কিছুক্ষণ। মিনিট খানেক পর, কোথায় আহ্লাদ, কোথায় জলের রুপোলী কণা, আর কোথায় সেই আনন্দ। আসতে আসতে বন্ধ হয় দরজা জানালা। সময়ের সাথে কাদা, জমা জল-এ জেরবার সব। যারা সেই জলকাদা মাড়িয়ে ক্ষেতে ফসল ফলায়, শুধু তাদের জন্যই আজও আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে।
হররোজের ঠিকানা ছেড়ে একটা সকাল ধার নিয়েছিলাম সময়ের কাছে। জানলা দিয়ে এসে পড়া রোদে গা সেঁকা, কাঠের টেবিলের ওপর রাখা চিনামাটির চায়ের কাপে চুমুকের মোহ ছেড়ে একটা সকাল আস্তানা গেড়েছিলাম ভৈরবীর সুরে বাউলের দলে। মিঠেকড়া রোদের আনন্দের পরও দুপুরের রোদে চামড়া পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলাম। তারপর সন্ধ্যের স্নিগ্ধ আলোতে আধময়লা শরীরটাকে ভাসিয়ে দেব সাগরে, এটাই ছিল অভিপ্রায়। যেটুকু সবার চাহিদার বাইরে সেরকম একটা চাহিদা হয়তো আমারই জীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে, এই ভেবে। সবে মিঠেকড়া রোদের আরামের পর চামড়ায় টান ধরছে, হঠাৎ বৃষ্টি নামল, থামল না আর। সেই বৃষ্টি তেই পুড়ল, চামড়া নয়, সময়ের কাছে ধার নেওয়া একটা দিন। পরের দিন থেকে আবার আমরা সবাই এক, সেই জানলা দিয়ে এসে পড়া রোদে গা সেঁকা, কাঠের টেবিলের ওপর রাখা চিনামাটির চায়ের কাপে চুমুক, সব নিয়ে এগোতে থাকল সময়।
বাড়ির পেছনের দিকের রাস্তাটায় কেও কোনদিন যায়নি, জঙ্গলে একসা হয়ে আছে। বাচ্চাসুলভ আবদার করেছি ছোটবেলায় অনেকবার, ওই পথটায় যাওয়ার। কিন্তু হয়ে ওঠেনি। সময়ের সাথে বড় হয়েছি আর জেনেছি যে পথটা বিপদসংকুল। একদিন জেদ চেপে বসল। সবার অলক্ষ্যে হাঁটা লাগালাম। কিছুটা জঙ্গলের ভেতরে এগোতেই পাখির ডাক শুনতে পেলাম। এরকম মিষ্টি ডাক তো আগে শুনিনি কোনদিন। সেই ডাক যেন আমাকে আরও এগিয়ে যেতে বলছে। এগোতে লাগলাম। জঙ্গলের কাঁটায় ছড়ে যেতে লাগলো আমার শরীর। তবু আমি অগ্রগামী। হঠাৎ একটা গাছের দুটো পাতা খসে পড়ল আমার ক্ষতের ওপর। নিমেষে জ্বালা কমে গেল ছড়ে যাওয়া ক্ষতের। ওপরে তাকাতেই চোখে পড়ল গাছের ওপর সুন্দর সুন্দর ফুল। এরকম সুন্দর ফুল তো আগে দেখিনি। ফুলের গন্ধে আমার নেশা হয়ে গেল। আমি পাগলের মত, নেশায় বিভোর হয়ে এগোতে লাগলাম। একটার পর একটা উপলব্ধি আমাকে বিস্মিত করে দিতে লাগলো। হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়লাম, আমার বিছানায়। না এতো স্বপ্ন হতে পারে না। ওই রাস্তা আমাকে ডাকছে। আরামের বিছানা ছেড়ে, পেছনের দরজা খুলে জঙ্গলে ঢুকে পড়লাম। ঢুকেই দেখি সামনে একটা জগদ্দল পাষাণ। আমার একার পক্ষে এটা সরানো সম্ভব নয়। পেছনের দরজা দিয়ে বাড়িতে গিয়ে আবার দরজাটা আগের মত বন্ধ করে দিলাম। তারপর থেকে রোজের নিয়মে আবার সামনের দরজা দিয়ে, কেটে যাচ্ছে জীবন। এখনো প্রশ্নটা জাগে, ওই পাষাণের পেছনে সত্যি কি সুন্দর একটা দুনিয়া আছে!
কোন একদিন কোন এক নোংরা মেটাস্টেবিলিটির নালায় পড়ে শুধু মাত্র ইচ্ছা আর উদ্যমের অভাবে, দম আটকে শেষ হয়ে যাবে, আমি, আমরা, আমাদের সব।

Thursday, March 3, 2016

আজকে আবার

আজকে তোমায় দেখব বলে,
টেলিস্কোপে চোখ রাখি;
ঝড় বাদলের দুষ্টুমিতে,
শুভদৃষ্টির পাট বাকি।


আজকে তোমায় ছোঁয়ার আশায়,
বাষ্প জমে জানলাতে;
রোদের ছোঁয়ায় সব গলে যায়,
আমার হৃদয় পাল্লাতে।


আজকে আদর করার নেশায়,
মনের কোণে মেঘ জমে;
দিন কেটে যায় কাজে কারবারে,
রাত্রি কাটে সংযমে।


আজকে আবার তোমার আমার,
প্রেম আদরের মাঝখানে;
স্পেস টাইমের কারভেচারে,
দিক সীমানার বাঁধ টানে।

Wednesday, March 2, 2016

প্যারালাল ইউনিভার্স

দুমড়ে মুষড়ে পড়েছিল সময়। কার্ভড স্পেস টাইম এর ফাঁকে ফাঁকে গাঁথা ছিল যন্ত্রণা। দেখা শোনা বোঝার বাইরে অন্য কোনো ডাইমেনসনে লুকিয়ে ছিল, লুকিয়ে আছে ও থাকবে, সব। রোজ সকালের আধসেঁকা পাউরুটির বুকে ছিদ্রে ছিদ্রে লুকিয়ে থাকা বাতাসের খোঁজ কেও রাখে না। মাখন বা জ্যাম এর প্রলেপ দিয়ে সেই যন্ত্রণা আমরা রোজ গিলছি।

দশটা বাজে। ফোনটা এখনও এলো না! হাঁসফাঁস করছে বুকটা। দুটুকরো বাদাম এর সাথে একটা পেগে চুমুক বসাতে বসাতেও মনটা ডুকরে উঠছে। দুতিনবার হাতটা ফোনের কল বাটনটা টিপতে গিয়েও ফিরে এলো। আরো কিছুটা সময় দেখি। সঙ্গে আরেক পেগ। তারপর কখন নেশায় ডুবে ঘুমিয়ে পড়েছি খেয়াল নেই। সেই ফোনের অপেক্ষা আর শেষ হয়নি। কার্ভড স্পেস টাইম এর ফাঁকে কোনো এক প্যারালাল ইউনিভার্স-এ হয়তো ফোনটা এসেছিল। সকালে উঠে আধসেঁকা পাউরুটির ওপর জ্যাম এর প্রলেপ দিয়ে গলাদ্ধকরন। তারপর আবার যেই কে সেই।
পরীক্ষাটা বেশ ভালই হয়েছিল। নিজের নামটা সিলেক্টেড ক্যান্ডিডেটদের তালিকায় দেখে মনের আনন্দটা ধরে রাখতে পারিনি। রোজ সকালে বাবাকে বেরিয়ে যেতে দেখি, ছেঁড়া একটা জামা আর ময়লা একটা প্যান্ট পরে। দুপুরে, রাতে খেতে বসে কোনদিন ভাবিনি আজকের খাবারটা কিভাবে জোগাড় হোল। সেই বাবা যখন আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে এতদিনের জমানো চোখের জলে আমার জামাটা ভিজিয়ে দিল, সেদিন আমার সমস্ত পাপের প্রায়শ্চিত্ত হয়েছিল। তারপর থেকে জয়েনিং লেটারটার অপেক্ষায় আছি। দিন গেল, মাস গেল, বছর গেল। আমার কতশত বন্ধু চাকরি পেল। আমি অপেক্ষায় এখনও। সকালে উঠে আধসেঁকা পাউরুটির ওপর জ্যাম এর প্রলেপটা আর কতদিন দিতে পারব জানিনা। তারপর তো উন্মোচিত হবেই, পাউরুটির বুকে ছিদ্রে ছিদ্রে লুকিয়ে থাকা যন্ত্রণা। তবু আজকের মত পাউরুটির ওপর জ্যাম এর প্রলেপ দিয়ে গলাদ্ধকরন। তারপর আবার যেই কে সেই, অপেক্ষা। সম্ভাবনাময়তার মায়া কাটিয়ে কোনো এক প্যারালাল ইউনিভার্স-এ হয়তো জয়েনিং লেটারটা পৌঁছেছিলো আমার হাতে।
সকাল দশটায় প্রেজেন্টেশান। স্নান খাওয়া সেরে আমি তৈরি। কিন্তু বৃষ্টিটা যেন হার মানতে চায় না। আমার এত বছরের সমস্ত পরিশ্রমের মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া সব আজকের প্রেজেন্টেশানের ওপর। আধসেঁকা পাউরুটির ওপর জ্যাম এর প্রলেপ দিয়ে কয়েক কামড় দিয়ে বৃষ্টি ভিজেই স্টেশনে পৌঁছলাম। "ক্রিপয়া ধ্যান দে, বারিশ কে কারণ ইস লাইন কি সারি ট্রেনে বন্ধ হ্যাঁয়। প্রতিকশা করে, ট্রেন-এ চালু হোনে পে সুচিত কিয়া যায়েগা।" তারপর অপেক্ষা, সাথে বৃষ্টি আর চোখের কোনে জমতে থাকা, ঘাম না জল, কি যেন একটা। কার্ভড স্পেস টাইমের অবাধ্যতার শিকার হলাম আবার। কোনো এক প্যারালাল ইউনিভার্স-এ হয়তো ট্রেনটা সময়মত এসেছিল।
ব্রেকফাস্টের টেবিলে সামনে প্লেটটা টেনে বসলাম,আধসেঁকা পাউরুটিটা আর পাশে জ্যাম এর শিশি । রানু ছুটে এসে বলল, ছাদে কাপড়গুলো মেলে এসেই দিচ্ছি, একটু অপক্ষা কর, বলেই ছুটে সিঁড়ি বেয়ে ছাদের দিকে। বেচারি সারা সকাল কাজের চাপে নাস্তানবুদ। তবু রানুর হাতের মাখানো জ্যাম না হোলে আমি পাউরুটিটা খেতে পারিনা । তাই অপেক্ষায় আমার সমস্যা নেই। হঠাৎ একটা ধপাস শব্দ, সঙ্গে তীব্র আর্তনাদ। সঙ্গে সঙ্গে জ্যামের প্রলেপ দেওয়ার অভ্যাসের সমাপ্তি। আর শুরু অপেক্ষার। হয়ত অন্য কোন প্যারালাল ইউনিভার্স-এ আমি রানুকে বলেছি, আজ তুমি একটু রেস্ট নাও আমি জামাকাপড় গুলো মেলে দিয়ে আসি। হঠাৎ মাথার মধ্যে বীভৎস একটা শব্দ হতে লাগলো, অবিরাম, বিরক্তিকর। কান ঝালাপালা হয়ে যেতে লাগলো, মাথা বনবন করে ঘুরতে লাগলো। একটা টনটনে ব্যাথা ক্রমশ মাথা থেকে কপালে, চোখে ছড়িয়ে পড়ছে। আর টাল সামলাতে না পেরে শরীরটা হাওয়ায় ভেসে গেল, মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়তেই একটা ঝাঁকুনি দিয়ে ঘুমটা ভেঙে গেলো। অ্যালার্ম ঘড়িটা তখনও বেজে চলেছে। সূর্য্যের আলোটা সোজা জানালা দিয়ে চোখে এসে পড়েছে। হয়তো কোনো এক প্যারালাল ইউনিভার্সে এগুলো একটাও স্বপ্ন নয়! রানু চা এর কাপটা টেবিলে রেখে বোলে গেলো, "অনেক বেলা হোলো উঠে পড়ো, অামি জামা কাপড় গুলো মেলে দিয়ে আসি ছাদে।"

Saturday, February 27, 2016

মৃত্যুর অভ্যাস

মৃত্যু ব্যাপারটা খুব গোলমেলে। বেশ কয়েক জায়গায় পড়েছি, অন্ধকারের যেমন অস্তিত্ব নেই, তা শুধু আলোর অভাব মাত্র, সেরকমই জীবনের অভাবই হোলো নাকি মৃত্যু। এ বিষয়ে আমি সহমত কি না, সে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার আগে এটা বোলে রাখি, মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না, ভয় পাই জীবনকে। আর তাই মৃত্যুর প্রতি আমার বিনম্র স্রদ্ধা।
আমি, আমরা, রোজ মৃত্যু দেখি। কারুর বুক ভরা আশার তো কারুর অদম্য উচ্চাকাঙ্ক্ষার । আর তার সাথে মিশে থাকা আরো জনা কয়েক মানুষের দুচোখ ভরা স্বপ্নের সলীলসমাধি আমাদের খুব চেনা। সমাজের হাড়হিম করা অবয়বের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে থাকা সামাজিকতাও মরছে রোজ, রাস্তায় বাজারে গলির মোড়ে চোখ রাখলেই দেখতে পাই শ্মশান যাত্রীর ঢল। আমি একা নই, আমরা সবাই রোজ নিয়ম করে দেখি। নিয়ম করে মানবিকতার ক্রমমৃত্যুতে আমরাও অংশীদার। কিন্তু এসব মৃত্যুও আজ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী। আমরা এতে ভয় পাই না, ভয় পাওয়ার কিছু আছে বোলেও মনে করি না। আসলে মানুষ মৃত্যুকে ভয় পায় না। মানুষ ভয় পায় অভ্যাসের মৃত্যুকে।
মৃত্যু, একটা মানুষের, একটা জীবনের, একটা সম্পর্কের। আর তার সাথে তার জীবনযাপনের। তার আচার ব্যাবহার, তার দৈনন্দিন চালচলনের সাথে মিশে থাকা আমাদের অভ্যাসের। মানুষ এমন একটি প্রাণী যা পরিবর্তন দেখে আনন্দ পায় কিন্তু নিজেকে, নিজের পারিপার্শ্বিককে পালটে ফেলতে গেলে পিছিয়ে আসে। এককথায় মানুষ অভ্যাসের দাস। ছোটবেলা থেকেই আমাদের অভ্যাস বশবর্তী হতে শেখানো হয়। সকাল-বিকেল নিয়ম করে পড়তে বসা থেকে শুরু করে সকাল-দুপুর-রাতে খাওয়ার অভ্যাস, সকালে রাতে নিয়ম করে দাঁত মাজা সবই আমাদের রক্তে মিশে গেছে। এইসব নিয়মানুবর্তিতা আমাদের নিয়মানুগ হতে শেখায় ঠিকই কিন্তু তার সাথে নিয়ম পালটে ফেলার প্রয়োজনবোধটাও আসতে আসতে ক্ষয় হতে থাকে। তবুও যেদিন নিয়মের বাইরে পরিবারের সাথে রাতের খাবারটা রেস্তোরাঁয় হয় কিম্বা সন্ধ্যের পড়াটা ব্যাতি রেখেই যখন মেলা ঘুরে আসা হয় বন্ধুদের সাথে, আনন্দটা কয়েকগুণ বেশি হয়, মন আনন্দে ভরে ওঠে। আয়ত্তে আনা নিয়মানুবর্তিতা কখনই মানুষের আদিম উশৃঙ্খল প্রবৃত্তিকে ছাপিয়ে যেতে পারে না, সুপ্ত থাকে মাত্র। প্রয়োজনে এই আদিম প্রবৃত্তিকে জাগিয়ে তুলতে না পারলে মানব আর যন্ত্রমানব এর কোন পার্থক্য থাকে না।
আর সেখানেই আমার ভয়। মৃত্যুকে নয়, জীবনকে। এই জীবনকে যেখানে মানুষ অভ্যাসের দাস, যেখানে মানুষের দৈনন্দিন অভ্যাসে মানবিকতার, সামাজিকতার মৃত্যু মিলেমিশে একাকার। আমার ভয়, মানুষকে নয়, মানুষের যন্ত্র মানবিকতার প্রতি অভিসারকে। তাই যখনই কারুর মৃত্যুতে দুচোখ ভাসাবেন, একবার ভেবে দেখবেন, আমাদের অভ্যাসগত মৃত্যুও কিন্তু অনেকের অভ্যাস বহির্ভূত মৃত্যুর সাথে জড়িয়ে থাকা অশ্রুর জন্য দায়ী।

Friday, February 26, 2016

সারমর্ম

বেশ কয়েক বছর হয়ে গেল আমাদের শিকড় গজিয়েছে। আমরা আর নড়তে চড়তে পারি না। যে মাটির টান ছিন্ন করে আমরা আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখতাম, সেই মাটিই আজ আমাদের সব। থাকা খাওয়া সবই এই মাটিতেই। সময়ের সাথে আমাদের ভেঙে পড়া শিরদাঁড়া আবার শক্ত করেছে এই মাটিই। 

মাঝে মধ্যে এসে গাছপালা গুলো আমাদের পাশে এসে বসে, আমাদের নিয়ে খেলা করে, আমাদের গায়ে পাতা বোলায়। আমাদের হাতের আঙ্গুল, মাথার চুল, গায়ের চামড়া ছিঁড়ে নেয় না। আমাদের হাত পা গলা কেটে নিজেদের জন্য খাট পালঙ্ক বানায় না। তারা গল্প করে নিজেদের মধ্যে,আমরা শুনি। এখনও গাছেরা সালোকসংশ্লেষ করে আমাদের সময় মত খেতে দিয়ে যায়, আমরা তাই খাই। 
এখনও পাখিরা আকাশে ওড়ে, গাছের ডালে গিয়ে বসে, আমরা শুধু দেখি। আমাদের ভ্রুনপ্রতিস্থাপন করে আমাদের বংশবৃদ্ধি করে বাঁচিয়ে রেখেছে এই পাখিরাই। মাঝে মধ্যে এসে আমাদের গান শোনায়। কাকটাও এসে গলা খাখরে মজা করে যায়। 

এখন আর ছাগল, গরু গাছের পাতা খায় না। রোজ দেখি গাছপালা গুলো খাবার রান্না করে ছাগল গরুদের খেতে দেয়। ছাগল গরুগুলো রোজ এসে আমাদের দুধ দিয়ে যায় খেতে। আমরা লজ্জায় চাইতে পারি না, তবু দিয়ে যায়, না চাইতেই। আর যাওয়ার সময় মাথায় লেজ বুলিয়ে দিয়ে যায়। আমরা কিছু বলতে পারি না, শুধু দেখি, দেখেই যাই। এখন আমাদের প্রতিবেশী মানুষটা আমাদের ছাগল বা গরু বললে আমাদের খারাপ লাগে না, বেশ গর্ববোধ হয়। 

ভালই আছি আমরা। ভাল আছে সবাই। কারুর সাথে কারুর ঝগড়া নেই, কেউ কাউকে ভয় পায়না, কেউ কারুর প্রতি ক্ষোভ পুষে রাখে না। এখন আমাদের আর কোন কাজ নেই, কাউকে কিছু দেওয়ার নেই। সারাদিন শুধু ভাবি, আমাদের শিকড় গজানোর আগে কি এরকম একটা পরিবেশ সত্যিই সৃষ্টি হতে পারত না!

Sunday, February 14, 2016

परछाई ज़िन्दगी की

कुछ मीठे लम्हे, कुछ यादें साथ है,
सर्द हवा सी सरसराती तेरी हर बात है,
लिपटने को दिल करे , हर पल , ऐय जानेमन ,
तेरी आगोश में मैंने एक सुकून की तन्हाई देखि है ,
तेरी आँखों में मैंने ज़िन्दगी की परछाई देखि है।

हरवक्त हर लम्हा तुझसे मिलने को दिल करे ऐय ज़िन्दगी ,
तेरी बाहो में फूल बनके खिलने को दिल करे ऐय ज़िन्दगी ,
इंतज़ार में ढल जाये ज़िन्दगी तो गम नही,
इसी इम्तेहां में मैंने अपनी रुसवाई देखि है,
तेरी आँखों में मैंने ज़िन्दगी की परछाई देखि है।

Thursday, February 11, 2016

তক্তি

ট্যাবলয়েডে জমতে থাকে ঘাম, পচতে থাকে কথা, স্মৃতির ফসিল ভাসিয়ে দিয়ে গাঙে, একটু নীরবতা। ফুটনোটেতে প্রণাম সেরে, ঝরছে বালি, সাতকাহন, জীবনের ঢাল মাটিতে, ছুটছে গাড়ি, যানবাহন। দিনেকের আলসেমি আর ঘোড়দৌড়ের মাঠ ছেড়ে, রাত্রি হোলে, বেহিসেবি চিন্তাগুলো, ঘর ফেরে। রাত জাগা পাখি, মনভোলানি, নিয়ম করে আদর মাখে, ক্লান্ত চোখে খুঁজছে শহর, ফিরিয়ে দেওয়া এই আমাকে।

Monday, February 8, 2016

The Renaissance

You stole my heart, I knew,
The very moment I saw you. And then we came closer, We laughed together, We pat' each others back. We strolled around the crowded roads, We sat over the empty beaches. You healed my wounds, I felt, You blown kisses and I melt', I adored you, I messed you up with joy, You lit the fire inside, You brought the snow over hills, And we together, redefined ourselves, We redefined love, an eternal bonding. We fell in love, I knew, The very moment I saw you.

কথা রাখবেনা জানি

নিদ্রাহীন চক্ষুপলক, কঠোর অভিমানী,
ওত পেতে বোসে থাকে রাগ, ধূসর বনানী, তবু, কথা রাখবেনা জানি।
এলোমেলো লাব - ডাব, নয়নেতে পানি, হৃদপুর আদালতে আজ বিবশ শুনানি, তবু, কথা রাখবেনা জানি।
ঢং ঢং ডংকা, বাতাসে পিসাচের বানী, আঁধার গভীর রাতে ছুরিকাঘাত হানি, তুমি, কথা রাখলেনা জানি।

Tuesday, February 2, 2016

Random Thoughts

Everyone has their own way of defining happiness. I am happy doesn't imply you would also be happy if you were me and vice versa. I am different so are you, miles apart from each other in confined space and time. Miles apart in features, not only physically but psychologically and even in how we react to situations, how we define ourselves, what we are and what we pretend to be, miles apart we are. Our priorities are different so as their dynamics, how they change, the time scales of their existence and the determination, the desperation of preserving the priorities are different as well, miles apart. The conundrum is ready to throw up in the air expecting a magical way out. Randomness creeps in, all possible steady states fight for their survival and then it sounds quite crazy how I got the stable and you the unstable ones. Well I am sure you feel the same, and here we broke the conundrum, we think in the same direction, however, with a completely different conclusion. So random is life, so different are people, so many paths to follow, so many hidden facts and so many stated rumors we live with. There are so many reasons to prove our worth but then again what dominate are the excuses, so many, to stand our own mistakes. So random are our choices, how differently we accept, reject and defend things and that is what defines the difference between what we are and what we pretend to be. So random is life, so random.

Monday, February 1, 2016

সিম্ফনি

আবেগের স্বরলিপি, পোকাকাটা বইয়ে মুখ গুঁজি,
গলা পচা ধারাপাতে, ক্ষণিকের স্তব্ধতা খুঁজি।
এলোমেলো কঙ্কাল, অবয়বে আনুবিস ক্লিশে,
বুক খুঁড়ে শুনেছি, সিম্ফনি, ধীরে ফিসফিসে।
স্পর্শের লুকোচুরি, পিঞ্জরে গোপন আদল,
পানসে, স্মৃতি মাখা সানগ্লাসে বৃষ্টিবাদল।
টুকিটাকি লেনদেন, বড়সড় কারচুপি ঢাকে,
ঝরে পড়া কবিতারা প্লাবনের পেলবতা রাখে।
বিভবের কম বেশী, পাগলা ষাঁড়ের দাপাদাপি,
মনের বাগান জুড়ে চরম অবাধ্যতা মাপি।
ভ্যাবাচ্যাকা সেরেবেলাম, মাসপেশি স্থির, জড়সড়,
শব্দ-খেলার মাঝে আবেগের অংশটা বড়।

Sunday, January 24, 2016

দংশন

বল্মকে সারা আকাশ ঢেকেছে,
ছিদ্রাল আজি বায়ু,
হৃদয়পাটে কারফিউ জারি,
যান্ত্রিক পরমায়ু।
সুষুম্নাতে ক্ষণ-অবসাদ,
মগজ পক্ষপাতী,
কলতান্ডবে ক্ষতবিক্ষত,
বলদাম্ভিক ছাতি।
নিরাপদ আজি চাঁদ সওদাগর,
লৌহ-মেকি-তাজে,
সমুখে কাল-রাত্রি, নীরবে 
মর-ডংকা বাজে।

Friday, January 15, 2016

ভেংচি

সংযম; তবু বিরহের চেয়ে দামী,
চার দেওয়ালের অন্তরালের সামাজিক নষ্টামি।
সংঘাত; জানি আদরের চেয়ে শ্রেয়,
বুকফাটা জলে ভাসিয়ে দেওয়া জ্যান্ত সারমেয়।

সঙ্গীত; এত হামবড়া ভাব তোর কিসে,
সবুজ বিতান ছাই হয়ে গেছে তোর উগরানো বিষে। 

Monday, January 11, 2016

एक प्यार का अफ़साना

अक्सर बिछड़ जाते हैं राह मे मिलने वाले, रातको बिखर जाते हैं दिन मे खिलने वाले,
महफ़िल भी अपना साथ छोड़ दे रात ढलते ढलते, वरना जाम की कमी नही करते प्यार करने वाले,
अक्सर बिछड़ जाते हैं राह मे मिलने वाले।

उनकी यादों से दिल लगा बैठे तो दर्द हुई,
सांसो में उन्हें पनहा दे बैठे तो दर्द हुई,
ये कोई इत्तेफाक नही की कश्मकश मे है ज़िन्दगी ,
अक्सर दिल जला बैठ ते हैं प्यार करने वाले, अक्सर बिछड़ जाते हैं राह मे मिलने वाले।

कसम एय उल्फत तेरी ज़ुल्फ़ो के छाओं मे,
शाम ढल आती हे दूर किसी गाँव में, लम्हा लम्हा जलता है दिल कशिश मे तेरी, और जान गवा बैठ ता है प्यार करने वाले, अक्सर बिछड़ जाते हैं राह मे मिलने वाले।

Friday, January 8, 2016

AWEসাধারণ

ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি, ওপরের ওঠার পথটা নাকি কঠিন! কিন্তু এতগুলো বছর পেরিয়ে, স্কুল কলেজ এর গণ্ডি মাড়িয়ে এলাম, কেও কোনদিন বলে দিল না যে পথটা যতটা কঠিন তার চেয়েও বেশী পঙ্কিল। অবশ্য ছোটো বেলায় এটাও শুনেছি যে পদ্ম পাঁকে ফোটে। কিন্তু এই দুটি কথা যে একসাথেও অর্থপূর্ণ হতে পারে সেটা অভিজ্ঞতাই শিখিয়েছে।

প্রত্যেকেই চায় তার সন্তানসন্ততি বড় হয়ে উঠুক, সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়ে উঠুক, কারণ তারা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে যাচাই করে বুঝেছেন, সাধারণ এর কোন মূল্য নেই। সাধারণ মানুষ থেকে অসাধারণ হওয়ার দৌড়টা যে কতটা একতরফা তা সেই দৌড়ে সামিল না হলে বোঝাটা কঠিন। জন্মের সাথে সাথে যে সাধারণ কিম্বা অতিসাধারণের তকমা সেঁটে দেওয়া হয় একটা বাচ্চাকে তার সার্বিক পারিপার্শ্বিক এর পরিপ্রেক্ষিতে, যার জন্য আদৌ সে দায়ী নয়, সেই তকমাটা তার জীবন ধারণের পরিপন্থী না হলে যে পরিমাণ কাঠখড় পোড়াতে হয় সেই সাধারণ কিম্বা অতিসাধারণ এর ছায়া থেকে বেরিয়ে আসতে, সেটা অপরিকল্পনীয়। আর যারা অসাধারণের ট্যাগ নিয়ে এ জগতে অবতরণ করে তাদের কাছে দুনিয়া একটাই, সেখানে সাধারণ বা অতিসাধারণের কোন জায়গা নেই। তাই জন্মানোর আগে আমি একজন রাজনীতিবিদ, চিত্রাভিনেতা কিম্বা ক্রিকেটারের ঘরের দুলাল হব, এই অভিলাষ প্রকাশের সুযোগটা বোধহয় সৃষ্টিকর্তার টেবিলে থাকা উচিৎ। অবশ্য এটা ভেবে বসার কোন কারণ নেই যে আমি সৃষ্টিকর্তা ভগবানে বিশ্বাসী। এতদিন ধরে মানুষের মধ্যে থেকে মানুষকেই বিস্বাস করে উঠতে পারলাম না! যাইহোক, মুল কথায় ফেরা যাক। তা সেই পঙ্কিল ঘোলা জলে সন্তরণে যারা সিদ্ধহস্ত, যারা পাঁকের মধ্যে কমলের সন্ধান পেয়েছেন বলে আমাদের ধারনা, তাদের লেজটা খুঁজে সেটা আঁকড়ে ধরে ভেসে বেড়ানো লোকের সংখ্যাটাও নেহাতই কম নয়। মাঝে মধ্যে মোটা লেজকে সতেজ ও সবল রাখতে তেল-মাখন ইত্যাদি দ্বারা মর্দন করে দেওয়াটা এদের কাছে নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ভুল ভাবার অবকাশ নেই, সন্তরণের জন্য লেজটা অত্যাবশ্যক। আর যারা সন্তরণ কিম্বা লেজে তেল-মাখন মাখানোর স্বাভাব কোনটাই আয়ত্তে আনতে পারেনি তাদের জীবনের মূল্য লোকাল বাস এর টিকিট এর মতন, যতক্ষণ বাসে আছে ততক্ষণ হাতবদল আর তারপর তো চেবানো chewing gum ও এর চেয়ে বেশী দামি। সে যা করেই হোক, একবার ওপরে উঠে যেতে পারলেই যে কেল্লা ফতে, এই ধারনা নিয়ে যারা ঝড়-বৃষ্টি-কাদা-পাঁক উপেক্ষা করে, লেজ ধরে কিম্বা মইয়ে ভর করে ওপরের দিকে উঠে চলেছে, যাদের দিকে তাকিয়ে নিচের মানুষগুলো ভাবে কি সুখেই না এরা ওপরের সিঁড়িটায় দাঁড়ীয়ে, তাদের অবস্থাটা অনেকটা ছেঁড়া টাকার মত, ফেলেও দেওয়া যায় না আবার ব্যাবহার উপযোগী ও নয়, শুধু ভরসা সরকার। আর রাস্তাটা অনেকটা সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়ীয়ে দেখতে পাওয়া দিগন্তের মত। পাড় থেকে বেশ সুন্দর দেখায়, মনে হয় একবার সমুদ্রে ঝাঁপ দিলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে দিগন্তে আর তারপর সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত হবে আমার নিয়ন্ত্রণে। যারা সাঁতার জানে না তাদের ধারনা যারা সাঁতার জানে তারা কি সৌভাগ্যবান। আর যারা নিজের সন্তরণশৈলীর ওপর ভরসা রেখে পাড়ের সাঁতার না জানাদের সাবাসি নিয়ে একবার ঝাঁপ দিয়েছে শুধু তারাই জানে, না আছে ফেরার পথ আর না আছে কোন গন্তব্য।

এই পর্যন্ত পড়ে যদি মনে হয়ে থাকে যে আমি একজন সমালোচক তাহলে আপনি যথার্থই ভাবছেন শুধু এটুকু যোগ করব যে সমালোচনার শেষটা যাতে আশাবাদী হয় সেই চেষ্টায় ত্রুটি রাখব না।  সুতরাং প্রশ্ন হোল, তাহলে উপায় কি! উত্তরটাও সর্বজনবিদিত। যদি সাধারণ মানুষ এর ছাপ নিয়ে এসেছেন তাহলে ভগবান আপনার সহায়, কারণ সাধারণ মানুষ আপনার প্রতিযোগী আর অসাধারণ মানুষদের কাছে আপনার কোন অস্তিত্ব নেই, যদি না তার কালো টাকার সদ্গতি করার সময় উপস্থিত হয়ে থাকে। এককথায় নিরুপায় এবং একা। তবে ফাটকা খেলতে ছাড়বেন না। একমাত্র ফাটকাই আপনাকে শীর্ষে পৌঁছে দিতে পারে কারণ একমাত্র এটাই নিরপেক্ষ। ফাটকার অভাব নেই এ দুনিয়ায়। ধর্ম, জ্ঞান-বিজ্ঞান, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে জাতি, নিয়ম-কানুন, সবই আজকাল ফাটকা। এসব দিয়েও যদি কিছু না করে থাকতে পারেন, একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া আপনাকে দেখার কেও নেই এটা যত তাড়াতাড়ি বুঝবেন ততই দেশের, দশের ও দাসের মঙ্গল। আর যদি ফাটকায় বিশ্বাস না রাখেন, নিজের ওপর আস্থা রাখা ছাড়া উপায় কি। একবার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, আমরা কেন জন্ম থেকেই হাঁটতে পারি না, কেন হামাগুড়ি দিয়ে, আছাড় খেয়ে শিখতে হয়। ভেবে দেখলাম, প্রকৃতি আমাদের ছোটবেলাতেই সাবধান করে দিয়েছে, ওপরের দিকে তাকিয়ে পথ চললে হোঁচট খেতে হয়। তাই প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধে কিছু করা, নইব-নইব-চ। প্রকৃতির নিয়মে আমরা ডানাবিহীন প্রাণী। পাখি দেখে ওড়ার সখ জাগাটা স্বাভাবিক, তবে কাঁকড়ার গল্পটাও যদি শোনা না থাকে তাহলে একটু মনে করিয়ে দেওয়াটা আমার কর্তব্য।

লোকাল ট্রেনে এক কাঁকড়া ব্যবসায়ি এক গামলা জ্যান্ত কাঁকড়া নিয়ে উঠেছেন। ভিড় ট্রেন, অথচ গামলার মুখটা হাঁ করে খোলা। কিছু কাঁকড়া গামলার গা বেয়ে ওপরের দিকে ওঠার চেষ্টা করছে। সেই দেখে, কিছুটা ভয় আর কিছুটা  উদ্বেগ এর বশবর্তী হয়ে এক সহযাত্রী বলেই ফেললেন, 'দাদা আপনার কাঁকড়ার গামলা টা যে খোলা, কিছু কাঁকড়া তো গা বেয়ে উঠেও আসছে। বেরিয়ে পড়বে তো!'  ব্যবসায়ি শান্ত গলায় উত্তর দিলেন, 'চিন্তার কোন কারণ নেই দাদা, এগুলো মানুষ-কাঁকড়া, দেখছেন না, একজন গা বেয়ে উঠছে অমনি আরেকজন তাকে টেনে নামিয়ে দিচ্ছে।'

সুতরাং মানুষ যতদিন এই সহজাত প্রবৃত্তিকে জয় না করছে, ডানাটা না হয় পাখিরই থাক।

আপনাদের কতটা খুশী করতে পারলান জানিনা, তবে তোষামুদে মানুষদের খুশী করাটা আমার স্বভাব বহির্ভূত। তাই আপাতত এখানেই ইতি টানছি। 

Wednesday, January 6, 2016

স্বীকারোক্তি - ১

আখড়ায় নামবো,
তিল তিল করে মাংসপেশি বুনেছি,
খাটের ওপাশ থেকে তোর চিৎকার শুনেছি।

আলো শেষ,
দিনে দিনে সলতে পুড়ে ছাই,
আজ রাতে তোর উষ্ণতা চাই।

ব্যাথা নেই,
অন্ধকারে, শেষ কোপ দিয়ে যাস,
তেলে-জলে মেশামেশি, অভ্যাস।

Monday, January 4, 2016

বদলের ইতিকথা - ১

টুকটুকে লাল শাড়ি,
পা দুটি লাল রঙে রাঙা,
ফুটফুটে বয়স ভারী,
শরীরের উঁচু নিচু ডাঙা।
মনে আশা, টুকরো ছোট বড়,
সজল চোখে, অদূর ভবিষ্যত,
চোখের কোণে, কাজল-কালো চিরে,
যায় দেখা অদম্য হিম্মত।
দিনে দিনে সবুজ থেকে হলুদ, 
তেলে জলে কেমন মিশে গেল,
গড়ে ওঠে কাঁচের প্রাচীর কবে,
"সে ইতিহাস গোপন থাকাই ভাল"। 

তারপর , নিয়ম, রীতিনীতি,
অভ্যাস এর সাথে ওঠা বসা,
টুকরো আশা স্তূপের ওপর বসে,
জীবনের কঠিন অঙ্ক কষা। 

Friday, January 1, 2016

মনখারাপের আকিবুকি

তালগোল পাকিয়েছে চিন্তা, উঁকি মারে একরাস ভয়, আলগা সুতার মাঝে ওয়েসিস, উড়ে গেছে বন্দি সময়। কদাকার, কিম্ভুত লোকজন, কাঁটাতার, বন্ধুর পথ, অমানিশি, খোঁচা মারে জোছনা, সঙসাজা, মেকি জনমত। হালফিলে হাত ধরে ঘুরতাম, ছোঁওয়াছুঁই, ঠোটে ঠোটে বিদ্বেষ, নিকোটিনে আধখাওয়া ফুসফুস, সাঁঝবাতি, দিন বুঝি হোলো শেষ।