ঘুম থেকে উঠে চোখ মেলতেই বেহুঁশ হওয়ার জোগাড়। ঘরের দেওয়াল, দরজা জানালা, টেবিল
চেয়ার সব দোমড়ানো। আমার ঘরের আলমারি থেকে কে যেন আমার বই খাতা, জামাকাপড়
গুলো দুমড়ে মুচড়ে শূন্যে ছুঁড়ে দিয়েছে। কৌতূহলের বশে অবতল দেওয়ালের বুকে
হাত বোলাতে গিয়ে বুকটা ছ্যাঁক কোরে উঠলো। প্রাচীর ভেদ করে গেল আমার হাতের
আঙুল। হঠাৎ বুকের মধ্যে একটা তীব্র ডানা ঝাপটানো অনুভব করতে শুরু করলাম।
বুকের ভেতর থেকে শ্বাসনালী বেয়ে তীব্র একটা ঝড় যেন গলা অবধি এসে আটকে
যাচ্ছে, শরীরের মধ্যে বনবন করে ছুটে বেড়াচ্ছে। চোখে মুখে ঘাম জমতে শুরু
করলো। ঘামের ফোঁটাগুলিও যেন কিসব আকার ধারণ করছে। দুমড়ে যাওয়া আয়নার পাশে
দাড়াতেই ভয়ে মুখ ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হলাম। কি বীভৎস আমাদের দুমড়ে যাওয়া রূপ।
আমার দেওয়ালে, আমার প্রিয় লাস্যময়ী অভিনেত্রীটিও যেন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে।
আমি কি তবে স্বপ্ন দেখছি, নাকি ঘুমের ঘোর এখনো কাটেনি! ডান হাতটা তুলে চোখ
কচলাতে গিয়ে প্রায় দম বন্ধ হয়ে এলো, হাত তন্নতন্ন করে হাওয়ায় খেলে
বেড়াচ্ছে, কোথায় চোখ, কোথায় মুখের অস্তিত্ব, কোথায় আমি! বেশ কিছুক্ষন
চুপচাপ চোখ বন্ধ কোরে বোসে থাকলাম। একটা দুস্বপ্ন শেষ হওয়ার অপেক্ষায়।
কিন্তু আবার চোখ মেলতেই, দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া সব চোখের সামনে। একটু সাহসে ভর
করে, জানালা দিয়ে উঁকি মারলাম। চারিদিকে যা দেখলাম তা গোলোকধাঁদার চেয়ে কম
কিছু না। মানুষ, গাছপালা, রাস্তাঘাট, গাড়িঘোড়া, পশুপাখি, দোকান বাজার, সব
যেন একটা প্যাঁচানো পাইপেরর মধ্যে ঢুকিয়ে গিঁটের পর গিঁট লাগিয়ে ছড়িয়ে
দেওয়া হয়েছে সর্বত্র। তারই মাঝে কোন একটা জায়গায় আমি আমার ঘরের মধ্যে
আবদ্ধ। কিছুই হাত বাড়িয়ে ছোঁওয়া যায় না। কোথাও পা ফেলে ভর দেওয়া যায় না,
যেন হাওয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছি, অস্তিত্বহীন, অবয়বহীন।
আমাদের বাস্তবটা কি এর চেয়ে আলাদা কিছু? কার্ভড স্পেস টাইম এর বাস্তবতা চাক্ষুষ করতে একবার চোখ মেলে দেখুন চারিদিকে। রাষ্ট্র, সমাজ, পাড়ার গলির আনাচে কানাচে, মাঠের ধারের গাছের নিচে, রাস্তায় দোকানে বাজারে সর্বত্র সবকিছুই দোমড়ানো নয় কি! আমাদের সোজাসাপটা চেহারার পেছনের ভাবনাগুলো কি এতোটাই সহজ সরল! একটা সহজ কথা বলার আগে তাকে দুমড়ে মুচড়ে নেওয়ার স্বভাব আমাদের সবার। শিক্ষা দীক্ষা, সমাজ সচেতনতা নির্বিশেষে আমরা সবাই ওই প্যাঁচানো পাইপের এক একটা চিত্রপট। ঘোরানো প্যাঁচানো গোলকধাঁধায় আমরা জর্জরিত। এক একটা সোজা চলে যাওয়া রাস্তা, এক একটা ওপরে উঠে যাওয়া সিঁড়ি, এক একটা চোখ ধাঁধানো ইমারৎ, এক একটা জমজমাট বাজার পাটের পেছনে লুকিয়ে আছে কতশত তালগোল পাকানো ইতিবৃত্ত। একবার নিজেকে প্রশ্ন কোরেই দেখুন না, একদিন সকালে ঘুম ভেঙে আয়নার সামনে দাঁড়াতে, নিজের বাহ্যিক অবয়বের পরিবর্তে নিজের আভ্যন্তরীণ চেহারা দেখতে পেলে ভির্মি খেতেন না তো!!!
আমাদের বাস্তবটা কি এর চেয়ে আলাদা কিছু? কার্ভড স্পেস টাইম এর বাস্তবতা চাক্ষুষ করতে একবার চোখ মেলে দেখুন চারিদিকে। রাষ্ট্র, সমাজ, পাড়ার গলির আনাচে কানাচে, মাঠের ধারের গাছের নিচে, রাস্তায় দোকানে বাজারে সর্বত্র সবকিছুই দোমড়ানো নয় কি! আমাদের সোজাসাপটা চেহারার পেছনের ভাবনাগুলো কি এতোটাই সহজ সরল! একটা সহজ কথা বলার আগে তাকে দুমড়ে মুচড়ে নেওয়ার স্বভাব আমাদের সবার। শিক্ষা দীক্ষা, সমাজ সচেতনতা নির্বিশেষে আমরা সবাই ওই প্যাঁচানো পাইপের এক একটা চিত্রপট। ঘোরানো প্যাঁচানো গোলকধাঁধায় আমরা জর্জরিত। এক একটা সোজা চলে যাওয়া রাস্তা, এক একটা ওপরে উঠে যাওয়া সিঁড়ি, এক একটা চোখ ধাঁধানো ইমারৎ, এক একটা জমজমাট বাজার পাটের পেছনে লুকিয়ে আছে কতশত তালগোল পাকানো ইতিবৃত্ত। একবার নিজেকে প্রশ্ন কোরেই দেখুন না, একদিন সকালে ঘুম ভেঙে আয়নার সামনে দাঁড়াতে, নিজের বাহ্যিক অবয়বের পরিবর্তে নিজের আভ্যন্তরীণ চেহারা দেখতে পেলে ভির্মি খেতেন না তো!!!
No comments:
Post a Comment