ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। ঝাপসা চশমার কাঁচে প্রায় কিছুই দেখা যাচ্ছে না। এরকম অবস্থায় ছাতা হাতে আর এগিয়ে যেতে না পেরে, একটা বন্ধ চায়ের দোকানের ছাউনি এর নীচে গিয়ে দাঁড়ালো আবির। ট্রাউজারের পকেট থেকে রুমালটা বের করে চশমার কাঁচটা মুছতে মুছতে হঠাৎ রাস্তাটা যেন পরিস্কার হয়ে গেল চোখের সামনে। আর চোখে পড়লো রাস্তার ওপারে একটা মেয়ে। বয়স খুব বেশী হলে আঠারো থেকে কুড়ি, রাস্তা পেরোনোর চেষ্টায় দোনামনা করছে। খুব চেনা চেনা ঠেকছে মুখটা, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছে না আবির।
কে, কোথায় দেখেছে ভাবতে ভাবতেই, হঠাৎ একটা দৌড়ে রাস্তা পেরনোর জন্য পা বাড়ালো মেয়েটি। ঠিক মূহুর্তের মধ্যেই ডান দিকের একটা বাঁক থেকে একটা গাড়ি তীব্র গতিতে এগিয়ে আসতে দেখে আবিরের হাত পা কেঁপে উঠলো। হাতের চশমাটা হাত থেকে পড়ে গেল। তার পা দুটো অস্থিরতার মধ্যে মূহুর্তে দৌড় লাগালো মেয়েটির দিকে। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই আবির ঠিক গাড়ির সামনে। ইতিমধ্যে মেয়েটা আবিরের একদম সামনে, যেন খিলখিলিয়ে হাসছে আবিরের দিকে চেয়ে। সেই হাসি মাখা চেহারাটা দেখে সারা শরীর বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল আবিরের। মূহুর্তে গাড়িটা তার শরীরের হাড় গোড় ভেঙে ফেলার আগে আবিরের মনে পড়ে গেল, ঠিক এই রাস্তার ওপরেই, এরকম একটা বৃষ্টিমুখর সন্ধ্যেতে আবিরের চলন্ত গাড়ির কাঁচে এসে ধাক্কা খেয়েছিল এই চেহারাটাই।
No comments:
Post a Comment