Thursday, December 31, 2020

ঘুম

সদ্য ঘুম ভেঙে চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানা থেকে মাটিতে পা ফেলতেই টের পেলাম পা দুটো অসাড়। মাটিতে পা ফেলে হেঁটে ওয়াশবেসিনের কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে টুথব্রাশটা হাতে তুলে নিতে নিতে বুঝলাম, হাতটাও। কিন্তু এইমাত্র যে চোখ কচলালাম, দিব্যি হাতটা ফিল করলাম মুখের ওপর! ঘুমের ঘোরে ব্যাপারটাকে পাত্তা না দিয়ে, মুখে একঝাপটা জল মারতেই শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত খেলে গেলো। একফোঁটা জলও অনুভব করলাম না আমার চোখ, গাল, থুতনি কোত্থাও। পাগলের মত জলের ঝাপটার পর ঝাপটা মারতে লাগলাম মুখে, নাহ কিচ্ছু টের পাচ্ছি না। হুড়মুড়িয়ে আবার চোখ কচলানোর ভঙ্গিতে চোখে মুখে হাত বোলাতে যাবো, হঠাৎ চোখ পড়লো সামনের আয়নায়। আয়নায় আমার প্রতিফলন কই!
 
দুই হাত কখন যে চোখ, মুখ, নাক ঘুরে মাথায় উঠে গেছে টেরই পাইনি। ভয়ে বুকটা ধড়ফড় করছে, নাভিশ্বাস উঠছে টের পাচ্ছি। একটা ফোন করতে হবে। ছুট্টে বেডের ওপর রাখা আমার মোবাইলটা নেওয়ার জন্য বিছানার দিকে মুখ ফেরাতেই চোখে পড়লো, আমার বিছানায় ঠিক আমার মত একজন শুয়ে, হাত দুটো চোখ কচলানোর ভঙ্গিতে, ঠিক যেন ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে আবার শুয়ে পড়েছে।

Saturday, December 26, 2020

এবং

আমি এবং,
মেঘের বুকে গল্প গড়া, বর্ষা না-নামা চিঠি,
শীতের সকালে ঝরে পড়া, কুয়াশার নাম না লেখা অবয়বে,
জানলার ওপর ঝাপসা হতে থাকে দিন দিন তার পুঙ্খানুপুঙ্খতা।
 
আমি এবং,
আমার সবুজ ঘাসে ভেজা মাঠ,
লুটোপুটি খাওয়া, বাধ না মানা,
আবেগঘন সন্ধ্যার বুকে তোমার চোখটিপে হাসা,
সূর্যাস্তের নীলিমা মাখা অন্ধকারে আজও ভাস্বর।
 
আমি এবং,
আমার পাখিডাকা, গাছের নীচের ছায়া,
দিগন্তব্যাপি চরাচর বেয়ে হাত বোলানো রোদ জল কাদা মাখা আমাদের সকাল দুপুর সন্ধ্যের কলকাকলি,
ভীড় রাস্তা, বাস ট্রাম, জনজোয়ারের ভীড় ঠেলে আজও ভাটিয়ালি গায়।
 
আমি এবং,
আমার লেপমুড়ি দেওয়া ভোর,
রোজ সকালে কুয়াশা মাখি, রৌদ্রস্নান করি,
কুয়াশা ভেজা মেঘের পাল্লার বুকে আঁচড় কাটি,
লেপমুড়ি ভাঙা রৌদ্রস্নানে আজও তার ছোঁয়া,
অভিমানি জ্যোৎস্না মাখা নিশুতি রাতে আজও ঠাঁই, পাহারাদার। 
 
শেষ সম্বল টুকু দিয়ে আঁকড়ে ধরা জানালার পাল্লা, ঘাসের ডগা, মোলায়েম পাতার বুক বেয়ে ঝরে পড়ার আগেও বলে যাওয়া,
যে কাল গেছে তা গেছে,
সামনের আঁকাবাঁকা গলিপথ বেয়ে যে অদূর ভবিষ্যৎ,
তা তোমার, তা আমার, এবং....।