Thursday, May 3, 2018

হরর স্টোরি

আসিফা, উন্নাও, আসাম আরো কত ঘটনা বিচারের অপেক্ষায়, আছে আর কিজানি আরো কত বছর থাকবে। রিপোর্ট বলছে বিচারকের সংখ্যা নেহাতই কম হওয়ায় বস্তা বস্তা কেস পড়ে পচছে আদালতে আদালতে। বিচারের এভারেজ সময়সীমা এক একটি দশক, যে সময়ের মধ্যে শুয়োঁপোকা প্রজাপতি হয়ে উড়ে যেতে পারে। এরমধ্যে আবার নতুন নতুন বিচারব্যাবস্থার জন্ম হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশের রোমিও স্কোয়াড এর রমরমার কথা আগেই শুনেছি, এবার হঠাত জেগে উঠলেন কোলকাতার দাদুরা। বস্তাপচা রোজনামচার বাইরে খোরাক খুঁজে নেওয়ায় কোলকাতার জুড়ি মেলা ভার। তা সে ভাগাড়ের মরা জীব জন্তুর মাংস খাওয়াই হোক কিম্বা মেট্রোয় দাদুদের মোরাল পুলিসিং। 
 
বিকিয়ে যাওয়া মিডিয়া আর পাচাটা চ্যানেলগুলির মুখ সবারই চেনা। মাঝে মধ্যে এন্টারটেইনমেন্টের জন্য চোখ রাখি তবুও। হতাশ হতে হয়নি এখনো অবধি। গুলতানি, মেকিদেশপ্রেম ও জনসেবার বুলি শুনে শুনে বেদ লিখে ফেললাম। হ্যাঁ ঠিক পড়েছেন, বেদ। মনে করিয়ে দি, বেদের অপর নাম শ্রুতি। বিগ এফএম ও একসময় শুনতাম। সৌভাগ্যবসত এখন আর সময় সুযোগ হয়ে ওঠে না। কোলকাতার নিত্যনৈমিত্তিক এডভেঞ্চারে খুব একটা কান পাতি না আজকাল। তাই মোরাল দাদু দেরও ভাগাড়ের দলে ঠেলে, এড়িয়ে গিয়েছিলাম। হঠাত চোখে পড়লো, বিগ এফএম এর একটি ভিডিও। বিগ এফএম রেডিও ছেড়ে সোজা ফেসবুকে, একটি গল্প নিয়ে। আনকোরা হাতে লেখা, লুপহোলে ভর্তি হলেও গা শিউরে ওঠার মত গল্প। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের নামে, আইন শৃঙ্খলা ভেঙে, রাস্তায় রাস্তায় বিচারব্যাবস্থার সাপোর্টের গল্প। একবিংশ শতকে প্রতিবাদ না করে কুল হওয়ার গল্প। মেট্রোয় সেফ লেডিস জোনে না বসে, দাদুদের কনুই মারার অধিকার দেওয়ার গল্প। সমাজে রেপ কালচার ছড়িয়ে দেওয়ার গল্প।
 
গল্পটি শুনে আমার গা শিউরে উঠেছে, শিক্ষিত উন্নয়নশীল সমাজের মানুষের মধ্যে এই কথাগুলো ওপেনলি ছড়িয়ে দেওয়ার সাহস আরো কত কত সুপ্ত ক্রিমিনালের সাহসে ইন্ধন দেবে তা ভেবে। আরো কত আসিফার জন্ম দেবে এই অগণতান্ত্রিক প্রচারমুখরতা, আরো কত বস্তা জমা পড়বে আদালতে, আরো কত স্বনিয়ন্ত্রিত বিচারব্যাবস্থা তৈরি হবে রাস্তায় রাস্তায়, আর আমরা কি শুধু এন্টারটেইনমেন্টের জন্যই চ্যানেল খুলে বসবো!

No comments:

Post a Comment